দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
সাহেব খ্যাত কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শিক্ষক সালেহীনকে আবারো গ্রেপ্তার করেছে আদালত।
বুধবার দুপুরে নিয়মিত হাজিরা দিতে হাজতে আসলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলাওয়ার হোসাইন-এর আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। সালেহীন কুষ্টিয়ার খোকসার মাশিলিয়া গ্রামের আনছার আলী মোল্লারপুত্র। সে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের সোনাপুর এস, ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম)। নাজমুস ছালেহীনের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে ও ব্যবসা করার জামানতের নাম করে খোকসা উপজেলার ১০ ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
একটি প্রতারনা মামলায় গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন নাজমুছ সালেহীন। তার নিকট আত্মীয়ের সহযোগীতায় মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে জামিনে মুক্তি পান নাজমুছ সালেহীন। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে প্রতারিত ব্যক্তিদের টাকা ফেরত না দিয়ে মামলা তুলে নিতে পুনরায় তাদের নানা ভাবে হুমকি-ধামকি দেন নাজমুছ সালেহীন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী শামিমুল ইসলাম গত ১৪/১০/২০২০ ইং তারিখে খোকসা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জিডি নং – ৫১৬ ।
সাধারণ ডায়েরি তদন্তকারী কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, জিডির পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কয়েকবার অভিযুক্ত নাজমুছ সালেহীন এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, নাজমুছ সালেহীন এখন খোকসার শাহেদ নামে পরিচিত হয়েছে । নাজমুছ সালেহীন গ্রেপ্তারের পর থেকেই একের পর এক তার অপরাধের কাহিনী উঠে আসতে শুরু করে। প্রতারিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কারো কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে আবার কারও কাছ থেকে ব্যবসা করার জামানতের নাম করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে খোকসার শাহেদ খ্যাত এই নাজমুছ ছালেহীন। ৪২ বছর বয়সী নাজমুছ ছালেহীন খোকসা উপজেলার মাশিলিয়া গ্রামের আনছার আলী মোল্লার ছেলে। একই সাথে নাজমুছ ছালেহীন সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের সোনাপুর এস, ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে়র সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়াও সুনামগঞ্জ সদরের বিহারী পয়েন্টে তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্র দোকান রয়েছে বলে জানা যায়। আরো জানা যায়, এ ব্যাপারে তার নামে খোকসা থানায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি প্রতারণার মামলায় গত ৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ।
মামলার বাদী খোকসার নিশ্চিন্তবাড়ীয়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে শামীমুল ইসলাম জানান, ব্যবসা করার কথা বলে নাজমুছ ছালেহীন তার কাছ থেকে জামানত বাবদ দফায় দফায় মোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা নিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তার কাছে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে তাল-বাহানা করে।
এ দিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের হাফিজ মোস্তাক আহমদ এর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে নাজমুছ ছালেহীন। আর খোকসার এস এম আনোয়ারের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ, আব্দুল লতিফ এর কাছ থেকে ৬ লাখ, সাজিদুল ইসলাম এর কাছ থেকে ২ লাখ, মনিরুজ্জামান এর কাছ থেকে ২ লাখ এবং হাবিবুল আলম মুর্শিদ এর কাছ থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, সিরাজুলের কাছ থেকে ২৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সিরাজুল এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করে অনেক ভুক্তভোগী। নাজমুছ ছালেহীন এসব টাকায় একটি এনজিওতে খাটান বলেও জানিয়েছেন অনেকই।
এ ব্যাপারে নাজমুছ সালেহিনের বাবা আনছার আলী মোল্লা বলেন, আমার ছেলে নাজমুছ সালেহিনের সাথে বেশ কিছুদিন কোন প্রকার যোগাযোগ নেই। আমার ছেলের কাছে যারা টাকা পাবেন তারা বেশ কয়েকজন আমার কাছে এসেছিল।
Leave a Reply